Skip to main content

সতীনাথ ভাদুড়ীর সম্পূর্ণ তথ্য

সতীনাথ ভাদুড়ী
-ইউসুফ মোল্লা

#জন্ম :
   ২৭শে সেপ্টেম্বর ১৯০৬,

#জন্মস্থান:
বিহারের পূর্ণিয়ার ভাট্টাবাজারে অঞ্চলে। পিতা ইন্দুভূষণের আদিবাড়ি নদীয়ার কৃষ্ণনগরে।

#পিতা :
ইন্দুভূষণ ভাদুড়ী

#মাতা:
রাজবালা দেবী।

#মৃত্যু:
    ১৯৬৫ সালের ৩০ মার্চ সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রয়াণ ঘটে। মাত্র আটান্ন বছর বয়সে ।

#শিক্ষাজীবন:
    সতীনাথের স্কুলজীবন শুরু হয় পূর্ণিয়া জেলা স্কুলে, ১৯২৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে পাটনা সায়েন্স কলেজ থেকে আই এসসি পাস করেন। ১৯২৮ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক, ১৯৩০ সালে অর্থনীতিতে এম এ পাশ করেন এবং পরের বছরেই পাটনা আইন কলেজ থেকে বি এল পাশ করেন।

#কর্মজীবন:
   ১৯৩২ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সতীনাথ পিতার সহকর্মীরূপে পূর্ণিয়া কোর্টে ওকালতি শুরু করেন।

#রাজনীতি:
   স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তিনি কংগ্রেসের একজন সক্রিয়কর্মী ছিলেন এবং পূর্ণিয়া জেলা কংগ্রেসের সম্পাদকের পদে আসীন ছিলেন ; কিন্তু দলের আভ্যন্তরীন কাজকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করে সমাজতন্ত্রী দলে যোগ দেন।
     ১৯৪০ সালের জানুয়ারি মাসে সতীনাথ ভাদুড়ী প্রথমবারের জন্য কারারুদ্ধ হন।১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তিনি দ্বিতীয়বার কারাবাসকালে জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেন ; এর ফলে তাকে ভাগলপুর সেন্ট্রাল জেলে বদলি করা হয়। এই কারাবাসকালীন সময়ই তার 'জাগরী' উপন্যাস রচনার প্রস্তুতিকাল। ১৯৪৪ সালে তিনি তৃতীয়বার কারাবরণ করেন। এই কারাবাসের সময় তার সঙ্গে ছিলেন ফণীশ্বরনাথ রেণু, অনাথবন্ধু বসু ,ফণীগোপাল সেন, জয়প্রকাশ নারায়ণ, শ্রীকৃষ্ণ সিংহ, অনুগ্রহনারায়ণ সিংহ প্রমুখ।

#সাহিত্যিক_জীবন:
  বাড়ি বাড়ি বই সংগ্রহ করে পূর্ণিয়া গ্রন্থাগার স্থাপনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে বাবা ইন্দুভূষণের নামে গ্রন্থাগারটির নাম হয় ‘ইন্দুভূষণ সাধারণ পাঠাগার’। বলা যায় প্রায় তাঁর একক উদ্যমে বাংলা ম্যাগাজিন ক্লাব, সাহিত্য আড্ডা প্রভৃতির প্রচলন হয়। এই সময়েই তিনি সাহিত্যিক কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য লাভ করেন। কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর সতীনাথ পূর্ণিয়ার কিশোর আর তরুণদের জন্য ব্যায়ামাগার গঠন ও শনিবারের সাহিত্যবাসর পরিচালনা করতে থাকেন।

#ছদ্মনাম:
চিত্রগুপ্ত’ এই সাহিত্যিক ছদ্মনামে পরিচিত তিনি।


#উপন্যাস:
১) জাগরী -১৯৪৫
২) চিত্রগুপ্তের ফাইল - ১৯৪৯
৩) ঢোঁড়াইচরিত মানস(প্রথম খন্ড) -১৯৪৯
৪) ঢোঁড়াইচরিত মানস(দ্বিতীয় খন্ড) -১৯৫১
৫) সংকট - ১৯৫৭
৬) দিকভ্রান্ত -১৯৬৬(মৃত্যুর পর প্রকাশিত)

#গল্প ও গল্পগ্রন্থ:
১) গণনায়ক - ১৯৪৮
২) সত্যি ভ্রমণ কাহিনি-১৯৫১
৩) অচিন রাগিনী-১৯৫৪
৪) অপরিচিতা -১৯৫৪
৫) চকাচকি - ১৯৫৬
৬) পত্রলেখার বাবা -১৯৬০
৭) জলভ্রমি = ১৯৬২
৮) আলোক দৃষ্টি-১৯৬৪

#উল্লেখযোগ্য গল্প :
১)বৈয়াকরণ
২) স্বর্গের স্বাদ
৩) পরকীয়া
৪) চরণদাস MLA
৫) বাহাত্তুরে
৬) ব্যর্থ তপস্যা
৭) মহিলা ইনচার্জ
৮) রোগী রহস্য
৯) ডাকাতের মা

#পুরস্কার ও সন্মান :
     ১৯৪৯ সালে তিনি বিদেশ যাত্রা করেন। বিদেশে থাকাকালীন সময়েই তিনি তার গ্রন্থ 'জাগরী'র জন্য বাংলাভাষায় প্রথম রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৫০) প্রাপ্তির সংবাদ পান। বিখ্যাত সাহিত্যিক ফণীশ্বরনাথ রেণু তার জীবনী মূলক স্মৃতিকথা 'ভাদুড়িজি' রচনা করেন, যা হিন্দি সাহিত্যের অন্যতম সম্পদ।

#তথ্য সম্ভার :
১) প্রথম রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত উপন্যাস -জাগরী ।
২) " জাগরী " উপন্যাস এর ইংরাজী অনুবাদক - লীলা রায় (" The Vigil " নামে )।
৩) শ্রেষ্ঠ উপন্যাস -" ঢৌঁড়াই চরিত মানস "।
৪) সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম আবির্ভাব - " বিচিত্রা " পত্রিকায় " জমাই বাবু " (১৯৩১) গল্পটির মধ্যমে ।
৫) "জাগরী " উপন্যাসটি রচনা করেন -ভাগলপুরের জেলে বসে ।
৬) " জাগরী " উপন্যাসটি আগস্ট আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত ।
৭) " অচিন রাগিণী " প্রকাশিত হয় -দেশ পত্রিকায় ।
৮) " অভিমন্যু " চরিত্রটি পাওয়া যায় -" চিত্রগুপ্তের ফাইল " উপন্যাসে ।
৯) " বিশ্বাসজী " চরিত্রটি পাওয়া যায় -" সংকট " উপন্যাসে ।
১০) " সংকট " আধুনিক চেতনা প্রবাহী উপন্যাস ।
১১) "চিত্রগুপ্তের ফাইল " মাতৃভূমি " পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ।
১২) " মাতৃভূমি " পত্রিকা বন্ধের পর " চিত্রগুপ্তের ফাইল " মাসিক " বসুমতী " তে " মীনাকুমারী " নামে প্রকাশিত হয় ।
১৩) সতীনাথ ভাদুড়ীর শেষ উপন্যাস হল " দিকভ্রান্ত"।
১৪) সুবোধ ডাক্তার , অতসীবালা ,সুশীলমণি চরিত্র গুলি আছে " দিকভ্রান্ত " উপন্যাসে ।
১৫) UNESCO থেকে লীলা রায় কৃত " জাগরী " এর ইংরাজি অনুবাদ " The Vigil " নামে প্রকাশিত হয় ।
১৬)  "চিত্রগুপ্তের ফাইল " উপন্যাসটি বলিরামপুর জুট মিলে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের ঘটনা অবলম্বনে রচিত ।
১৭)  " দিকভ্রান্ত " উপন্যাসের কাহিনি তেইশটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত ।


#তথ্য_সংগ্রহ:
১) সতীনাথ স্মরনে—সুবল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত।
২) সতীনাথ ভাদুড়ী, আধুনিক বাংলা উপন্যাসের একটি অধ্যায়—ডঃ মৈত্রেয়ী ঘোষ। 
৩) সতীনাথ ভাদুড়ীর জাগরী ও ঢ়োঁড়াই চরিত মানস—ড:স্বস্তি মণ্ডল।
৪) বাংলা উপন্যাসের কালান্তর - সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
৫) সতীনাথ ভাদুড়ী : সাহিত্য ও সাধনা - গোপাল হালদার।
৬) প্রসঙ্গ : জাগরী - পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় ।
৭) সতীনাথ মনন ও শিল্প - মিহিরকুমার মজুমদার।
৮)উইকিপিডিয়া
৯) বিভিন্ন ব্লগ
১০) ইন্টারনেটের বিভিন্ন পেজ


Comments

Popular posts from this blog

লীলা মজুমদারের সম্পূর্ণ তথ্য

 লীলা মজুমদার - ইউসুফ   মোল্লা #আজ_সকাল_সকাল_চলে_এসেছি #লীলা_মজুমদার_নিয়ে  (ফেব্রুয়ারি ২৬, ১৯০৮ - এপ্রিল ৫, ২০০৭)         আমাদের দেশে ‘শতায়ু হও’ বলে আশীর্বাদ করা হয়ে থাকে। বাঙ্গালী লেখক-লেখিকাদের মধ্যে মাত্র দুজন এই একশ বছরের আয়ু স্পর্শ করেছেন বা স্পর্শ করার কাছাকাছি জায়গায় পৌঁছেছিলেন। তাঁরা হলেন - নীরদ চন্দ্র চৌধুরী এবং লীলা মজুমদার। তবে শত বর্ষের কাছাকাছি আয়ুতে পৌঁছালে অনেক ক্ষেত্রেই সুখের চেয়ে দুঃখ বেদনাই বেশী থাকে। নীরদ চন্দ্র চৌধুরী প্রায় পুরো সময়টাকেই লেখা পড়ার কাজে লাগিয়েছিলেন। লীলা মজুমদার শেষের প্রায় এক দশক বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। কিন্তু লীলা মজুমদার নিজের কর্মজীবনে এমন কিছু কালজয়ী সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন তা তাকে বাংলা সাহিত্যে অমর করে রেখেছে। বিশেষতঃ শিশু সাহিত্যে লীলা মজুমদার একটি অপ্রতিদ্বন্দী নাম। এখানে লীলা মজুমদারের পূর্ণাঙ্গ জীবন , তাঁর সাহিত্য কর্মগুলির আলোচনার সাথে সাথে তাঁর রচনা বৈশিষ্ট্য ও বর্তমান প্রজন্মে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা ইত্যাদি বিষয়গুলির প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে।  ১৯০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ...

🌸দশম শ্রেণীর উৎস সন্ধানে🌸

🕸দশম শ্রেণীর সাহিত্য সঞ্চয়ন,সাহিত্য সম্ভার ও কোনির সকল গ্রন্থের উৎস🕸 **সাহিত্য সঞ্চয়ন (দশম শ্রেণি)** ১)"শাবলতলার মাঠ" লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় । উৎস: বিভূতি রচনাবলী অষ্টম খন্ড । ২)"তিন পাহাড়ের কোলে" কবি: শক্তি চট্টোপাধ্যায় । উৎস: "অগ্রন্থিত পদ্য" (বাজার চলতি বই-এ লেখা "হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান") ৩)"জ্ঞানচক্ষু" লেখিকা : আশাপূর্ণা দেবী । উৎস : কুমকুম গল্প সংকলন। ৪)"বুধুয়ার পাখি" কবি : আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত । উৎস : যৌবন বাউল । ৫)"অসুখী একজন" কবি :পাবলো নেরুদা । উৎস :বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে ।(পাবলো নেরুদার "Extravagaria" কাব্যের “La Desdichada”কবিতাটি নবারুণ ভট্টাচার্য "অসুখী একজন" নামে অনুবাদ করেন এবং অনূদিত " বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে" গ্রন্থে অন্তর্ভূক্ত হয়)। তরজমা : নবারুণ ভট্টাচার্য । ৬)"আমাকে দেখুন" লেখক :শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় । উৎস :'শ্রেষ্ঠ গল্পসংকলন'। পরে "শীর্ষেন্দুর সেরা ১০১" অন্তর্ভুক্ত হয়। ৭)"আয়...

আশাপূর্ণা দেবীর সম্পূর্ণ তথ্য

আ শাপূর্ণা দেবী - ইউসুফ মোল্লা   #কথা_মতো_ভোর_ভোর_চলে_এসেছি #আশাপূর্ণা_দেবীকে_নিয়ে #জন্ম : ৮ ই জানুয়ারি ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর কলকাতায় মাতুলালয়ে। #পিতা : হরেন্দ্রনাথ গুপ্ত। #মাতা : সরলাসুন্দরী দেবী। #আদি_নিবাস : হুগলি জেলার বেগমপুর। #জীবনসঙ্গী : কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা কালিদাস সেনগুপ্তের সঙ্গে ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১৫ বছর ৮ মাস বয়সে আশাপূর্ণা দেবীর বিবাহ হয়। #মৃত্যু : ১৩ ই জুলাই ১৯৯৫।         ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ‘শিশুসাথী’ পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা “বাইরের ডাক” প্রকাশিত হয়। এর মাধ্যমে তিনি সাহিত্য জগতে আত্মপ্রকাশ করেন।        বড়োদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম ছোটগল্প  “পত্নী ও প্রেয়সী”। এই ছোটগল্পটি ১৩৪৩ বঙ্গাব্দে শারদীয়া "আনন্দবাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত হয়।       আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম প্রকাশিত ছোটগল্প "পাশাপাশি"।    ছোটদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম ছোটগল্প সংকলন - “ছোট ঠাকুরদার কাশী যাত্রা” ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।     বড়োদের জন্য লেখা প্রথম প্রকাশি...