Skip to main content

Posts

Showing posts from 2021

আমার বন্ধুর কথা

 এক ঝরে যাওয়া প্রতিভা, সন্দীপের কথা — ইউসুফ মোল্লা      এ লেখা লিখতে বসলেই মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তবুও লিখতে হবে। কারণ সাহিত্য জগতে তার অবদান অস্বীকার করার জায়গা নেই। মাধ্যমিকে পড়ার সময় একটা ভাবসম্প্রসারণ করতাম, "জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে চিরস্থির করে নীর   হায়রে জীবন-নদে?" তখন এর মূলভাব বুঝতাম না। আমাকে নম্বর পেতে হবে, এই উদ্দেশ্য নিয়ে মুখস্থ করতাম। এখন বুঝতে পারি জন্ম মাত্রই মৃত্যু অনিবার্য; কিন্তু মহৎ কার্যাবলির মাধ্যমে মানুষ জগতে অমরত্ব লাভ করে। সন্দীপ(দাস) ঠিক সেইরকম। খুব অল্প বয়সে চলে গেলো আমাদের ছেড়ে, কিন্তু তার সেই সাহিত্য চর্চা- অমর কীর্তি আমাদের কাছে অমরত্ব লাভ করেছে। আমি চাই আরো দীর্ঘদিন তার নিয়ে চর্চা হোক। মাত্র ৩৩ বছরের এই জীবনে একাধিক বই প্রকাশ করেছিল। আমার জানা মতে আটটির অধিক বই প্রকাশ করেছিল। তার যেকোনো একটি বই পড়লে বোঝা যায় তার চিন্তাভাবনা,জ্ঞানের গভীরতা কতখানি। যেমন- 'ডায়েরির ছেঁড়া পাতা' প্রবন্ধ সংকলনে আছে রামকিঙ্কর বেইজের জীবন ও শিল্প, বাউড়ি জনজাতির পুজো, দেবদেবী, লোকাচার ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি ভারতীয় সমাজে নারীদের অবস্থা

অভিনয় জগতের বাইরে পুলুবাবুর জীবন _ ইউসুফ মোল্লা

  অভিনয় জগতের বাইরে পুলুবাবুর জীবন _ ইউসুফ মোল্লা ম্যাট্রিকুলেশন পাশের পর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতার সিটি কলেজে ভর্তি হন। প্রথম দু'বছর সায়েন্স নিয়ে পড়লেও আগাগোড়া সাহিত্যের প্রতি অগাধ টান থাকায় আইএসসি থেকে বাংলা অনার্সে বিএ পাশ করেন। বাবা যদিও চেয়েছিলেন বটানি নিয়ে ছেলে পড়াশোনা করুক। ফরেস্ট অফিসার হোক। কিন্তু তা আর হওয়া হলো না। হলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক, সম্পাদক এবং অভিনেতা। তিনি নিজেই এনসিসি করার কারণে মিলিটারির দিকে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বাবার নিষেধের কারণে সেটা হওয়া হলো না। তাঁর বাবা বললেন, "ওই লাইফ তোমার পক্ষে ঠিক হবে না"। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর কারণ জিজ্ঞাসা করতে, তাঁর বাবা উত্তর দেন- "আর্মিতে প্রতিটি বিষয়ে তোমার ঊর্ধ্বতনকে স্যালুট ঠুকতে হবে। সেটা তুমি পারবে না।" তাঁর বাবার এই অন্তর্ভেদী কথা সারা জীবন তাঁর নানা কাজে লক্ষ্য করা গেছে। তাইতো বর্তমান সরকারের বিপক্ষে NRC- র বিরুদ্ধে সই করতে দেখা গিয়েছিল। আজীবন শিরদাঁড়া সোজা করে চলেছিলেন, কারো সামনে মাথা নত করেননি।       সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় মার্ক্সের সমর্থন হলেও কখনো কমিউনিস্ট পার্

জীবনানন্দ দাশ: প্রতিবন্ধকতা ও সফলতা

 জীবনানন্দ দাশ: প্রতিবন্ধকতা ও সফলতা - ইউসুফ মোল্লা "সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি"(কবিতার কথা) - এই কথা যিনি বলতে পারেন, তিনি যে 'শুদ্ধতম কবি' হবেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখেন না। জীবনের আনন্দ নিয়ে জীবনানন্দ হননি, জীবদ্দশায় তিনি পাঠকমহলে জনপ্রিয় ছিলেন না। তাইতো মাত্র সাতটি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছিল জীবদ্দশায়। মৃত্যুর পরে তাঁর লেখার খাতায় অগ্রন্থিত প্রচুর কবিতা, গল্প পাওয়া যায়। সত্তর দশকের পরে পাওয়া উপন্যাসগুলো প্রকাশিত হওয়ার পরে জানতে পারা যায়, তিনি শুধু কবি নন, মনোগ্রাহী উপন্যাসিকও। যেমন- মাল্যবান (১৯৭৩),সুতীর্থ(১৯৭৭), সফলতা-নিষ্ফলতা(২০০৫)। একইভাবে প্রবন্ধকার হিসাবে পরিচিতি লাভ না ঘটলেও তাঁর প্রথম প্রবন্ধের বই 'কবিতার কথা'(১৯৫৬) বাংলা সাহিত্যের রদবদল ঘটিয়ে দেয়। তাঁর মা কুসুমকুমারী দাশ যে ধরনের 'আদর্শ ছেলে' খুঁজেছেন, তিনি তা হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। কথায় বড় হননি, কাজের মাধ্যমেই বড় হয়েছেন। কবি ছিলেন অসম্ভব গম্ভীর প্রকৃতির এবং চরম ধৈর্যশীল মানুষ। ভালোবাসতেন পরিবারকে, সংসারের টুকিটাকি কাজগুলো ভালোবাসতেন। দুই ছেলেমেয়ে, স্ত্রী লাবণ্যের পেনসিলের মাথা ধার